রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সংলগ্ন বাসা বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য দেওয়া নোটিশের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকশীবাসী। বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) কার্যালয় ঘেরাও শেষে স্মারকলীপি প্রদান করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে ঈশ্বরদীর পাকশীতে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হব্বুল, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, ইউপির সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ব্রিটিশ আমলে রেল লাইন স্থাপন ও স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে পাকশীতে রেলওয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারীর পাশাপাশি কয়েক হাজার ছিন্নমুল মানুষ বসবাস করে আসছে। পাকশীতে ইপিজেড স্থাপনের পর দূর দূরান্ত থেকে আরো অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ রেলওয়ের জমিতে বসতি গড়ে তুলেছেন। শান্তিতে বসবাস করছেন। কিন্তু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) নিরাপত্তার জন্য নিরাপত্তা ফোর্স বেজ গঠনের জন্য রেলওয়ে পাকশী বিভাগের অধিনে থাকা প্রচুর পরিমাণের পরিত্যক্ত জমি বরাদ্দ না দিয়ে জনবসতি এলাকা থেকে মানুষকে উচ্ছেদ করে জমি প্রদানের অপচেষ্টা করছেন।
তাঁরা আরো জানান, মাননিয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলছেন, জনবসতি উচ্ছেদ করে কোন উন্নয়ন প্রকল্প নয়। অথচ রেলওয়ের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা পাকশীবাসীকে উচ্ছেদ করার পায়তারা স্বরুপ বাসা বাড়ি থেকে জনসাধারণকে উচ্ছেদ করতে বারবার নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান করোনার মহামারিতে সরকারী প্রনোদনায় যেখানে মানুষ বেঁচে আছে, সেখানে উচ্ছেদের পাঁয়তারা কেনো। তাঁরা আরো জানান, আগে পাকশীবাসীকে সরকারীভাবে সম্মানজনক ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসন করতে হবে। তারপর উচ্ছেদ করতে হবে। ক্ষতি পূরণ ও পূর্নবাসন করা না হলে প্রয়োজনে জীবন দেওয়া হবে তবু প্রিয় জন্মস্থান পাকশী ছাড়া হবে না।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম জানান, রেলওয়ের বাসাবাড়িতে অবৈধভাবে বসবাসকৃতদের উচ্ছেদ করতে বাসা থেকে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন কর্মসূচি নিয়োমিত কর্মসূচির অংশ। রেলওয়ের কর্মচারীদের পুর্নবাসনের বাজেট চাওয়া হয়েছে। বাজেট এলেই তাঁদের পূর্নবাসন করার কাজ শুরু করা হবে। সেই পর্যন্ত তাঁরা বরাদ্দকৃত বাসাতেই কর্মচারীরা থাকবেন। কিন্তু অবৈধভাবে বসবাসকৃত ছিন্নমুল বা অন্যদের জন্য কিছু করার সক্ষমতা ডিআরএম হিসেবে আমার নেই। পাকশীবাসির সুবিধা-অসুবিধা দেখার দায়িত্ব ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউএনও, জেলা প্রশাসক, রেলমন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং আণবিক শক্তি কমিশন।
বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা শেষে পাকশী বাসির পক্ষ থেকে বিষয়টি সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণসহ জরুরী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য ডিআরএম এর হাতে স্মারণলীপি প্রদান করেন।
Leave a Reply