ঈশ্বরদীতে অজ্ঞাতনামা প্রতিবন্ধী যুবক (ভিুক) হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। আলোচিত এই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে চারজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম। সোমবার দুপুরে ঈশ্বরদী থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এসব তথ্য জানান। গত ২৪ জুন গভীর রাতে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের ছিলিমপুর রহিমপুর গ্রামে জাহিদুল ইসলাম প্রামানিকের বাড়িতে খুন হয় প্রতিবন্ধী ভিুক মিলন হোসেন ওরফে চাপা (৩০)। পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় ওই রাতেই লাশ উদ্ধার করে ঈশ্বরদী থানা নিয়ে আসে। খুনের ঘটনার সন্দেহে পুলিশ সে সময় উপজেলার সাহাপুরের আওতাপাড়া থেকে জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী ছামেলা খাতুনকে আটক করে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আরও জানান, নিহত যুবকের প্রকৃত নাম মিলন হোসেন। সে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা গ্রামের আবু বক্কার মাতুব্বরের ছেলে। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারতো না। চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা থানার দর্শনার ভূমিহীন পাড়ায় তাঁর শ্বশুর বাড়িতে থেকে সে ভিা করতো। পুলিশ এই হত্যাকান্ডের রহস্য তদন্তের জন্য ঈশ্বরদীর শাকিল হোসেন ও সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া গ্রাম থেকে জাহিদুল প্রামাণিক ও নিরঞ্জন দাসকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, প্রায় ছয় বছর পূর্বে মিলনের সঙ্গে জাহিদুলের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে জাহিদুল ও মিলন এক সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা এলাকায় ভিা করতো। পরবর্তীতে তাঁরা পাবনার চাটমোহর রেলবাজার এলাকায় বাসা ভাড়া দিয়ে ভিা শুরু করে। সেখানে দুইমাস ভিা পর মিলন ও জাহিদুলের মধ্যে ভিার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে চরম বিরোধ বাঁধে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াও হয়। এই ঘটনার পর জাহিদুল, তাঁর স্ত্রী সামেলা খাতুন, ছেলে শাকিল ও সহযোগী নিরঞ্জন মিলে ভিুক মিলনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৪ জুন দিবাগত রাত একটার প্রতিবন্ধী মিলনকে তারা বালিশ চাপায় শ্বাসরোধ ও ব্লেড দিয়ে শরীর কেটে তাঁকে হত্যা করে বাড়ির পাশের একটি শয়ন কে লাশ লুকিয়ে রাখে। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর এই খুনের ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। পুলিশ সুপার আরও জানান, আটক চারজনকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত রোববার পাবনা আদালতে হাজির করা হলে তারা দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ হাদিউল ইসলাম ও জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি) ইন্সপেক্টর শেখ মোঃ মোবারক পারভেজ প্রমুখ।
Leave a Reply