বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বলাৎকারের চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে শিশু জিহাদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা ॥ লম্পট নরপিশাচ গ্রেফতার নবাগত উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে ঈশ্বরদী কিন্ডার গার্টেন এ্যাসোসিয়েশন নের্তৃবৃন্দের ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় ঈশ্বরদীতে নিখোঁজের একদিন পর শিশুর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার ॥ একজন আটক সকাল প্রি-ক্যাডেট স্কুলে অভিভাবক সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত আছাদ ফুড প্রোডাক্ট’র নামে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ রূপপুর-বগুড়া গ্রিড লাইনে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু ঈশ্বরদীতে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঈশ্বরদীতে ইজিবাইক চালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার ঈশ্বরদী বাজারে গ্রীল কেটে ও তালা ভেঙে চার দোকানে চুরি ঈশ্বরদীতে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ক্ষুদ্ধ গ্রাহক “গ্রামে বিদ্যুৎ যায় না আসে”
শিরোনাম :
বলাৎকারের চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে শিশু জিহাদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা ॥ লম্পট নরপিশাচ গ্রেফতার নবাগত উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে ঈশ্বরদী কিন্ডার গার্টেন এ্যাসোসিয়েশন নের্তৃবৃন্দের ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় ঈশ্বরদীতে নিখোঁজের একদিন পর শিশুর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার ॥ একজন আটক সকাল প্রি-ক্যাডেট স্কুলে অভিভাবক সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত আছাদ ফুড প্রোডাক্ট’র নামে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ রূপপুর-বগুড়া গ্রিড লাইনে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু ঈশ্বরদীতে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঈশ্বরদীতে ইজিবাইক চালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার ঈশ্বরদী বাজারে গ্রীল কেটে ও তালা ভেঙে চার দোকানে চুরি ঈশ্বরদীতে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ক্ষুদ্ধ গ্রাহক “গ্রামে বিদ্যুৎ যায় না আসে”

 

শর্ত পূরণ না করেই মুলাডুলি এগ্রো ফিডের আবেদন : লাইসেন্স দিতে মরিয়া ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর!

মহিদুল ইসলাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১
  • ৫১৩ বার

ঈশ্বরদীতে মৎস্য ও পশু খাদ্য উৎপাদনের জন্য ‘মুলাডুলি এগ্রো ফিড’ নামের একটি নাম মাত্র প্রতিষ্ঠানকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে “ক্যাটাগরি-১ লাইসেন্স” দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ঈশ্বরদীর প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর। এর স্বপে মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অপর দিকে একই প্রতিষ্ঠানের নামে ঈশ্বরদী উপজেলা মৎস্য অফিসে “ক্যাটাগরি-১ লাইসেন্স” এর জন্য আবেদন করা হলে সরেজমিন তদন্তপূর্বক ওই আবেদনটি বাতিল করা হয়।
সুত্র জানায়, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ একই মন্ত্রনালয় হলেও তাদের অধিদপ্তর আলাদা। খাদ্য উৎপাদনের েেত্র তাদের (মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ) নীতিমালা ভিন্ন ভিন্ন হলেও মৎস্য’র চেয়ে প্রাণী সম্পদের নীতিমালা বেশ কঠিন বলেও জানা গেছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, “ক্যাটাগরি-১ লাইসেন্স” দেওয়ার জন্য মুলাডুলি এগ্রো ফিড নামের ওই প্রতিষ্ঠানকে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। আর ঈশ্বরদীর মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেন, মৎস্য খাদ্য উৎপাদন নীতিমালা পূরণ না হওয়ায় ওই আবেদনটি বাতিল করা হয়েছে। “ক্যাটাগরি-১ লাইসেন্স” পাওয়ার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয় তার কোনটিই মুলাডুলি এগ্রো ফিড নামের ওই প্রতিষ্ঠানে নেই।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মুলাডুলি রেলগেট সংলগ্ন ঘনবসতি পূর্ণ এলাকার একটি টিনের ঘরে ‘মুলাডুলি এগ্রো’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান। ঠিক তার পেছনে ভাড়া করা জমিতে একটি মিনি মিল বসিয়ে সেখানে ভুট্টা, ধানের গুড়াসহ বিভিন্ন ডাষ্ট ভাঙ্গিয়ে ও মিক্সার করে দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন মৎস্য ও পশু খাদ্য উৎপাদন করে আসছেন। যা কিনা স্থানীয় বাজারে দেদারসে বিক্রিও করছেন বলে স্বীকার করেন মুলাডুলি এগ্রো’র মালিক শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে চরম অব্যবস্থাপনা আর নোংড়া পরিবেশ বিরাজমান থাকলেও ছিল না অত্যাধুনিক ল্যাব। ল্যাবের দু’একটি উপকরণ থাকলেও সেখানে কর্মরত কাউকে দেখা যায়নি। খাদ্য উৎপাদনে শুটকি মিক্সারের কথা বলা হলেও তার দেখা মেলেনি। সবকিছু মিলিয়ে “ক্যাটাগরি-১ লাইসেন্স” প্রাপ্তির কোন যোগ্যতাই নেই মুলাডুলি এগ্রো নামের ওই প্রতিষ্ঠানটির এমন অভিমত সংশ্লিষ্টদের।
প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের খাদ্য উৎপাদন নীতিমালায় তফসিল-৩ এ লাইসেন্স প্রাপ্তির শর্ত হিসেবে যে সমস্ত বিষয়াদি উল্লেখ রয়েছে তার বেশির ভাগই মুলাডুলি এগ্রো নামের ওই প্রতিষ্ঠানটিতে নেই। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে কারখানা স্থাপন না করার শর্ত থাকলেও তা মানা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির আশে-পাশে অসংখ্য ঘর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্যাকিং ও লেভেলিং এর বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে কোন তথ্য নেই। লাইসেন্স প্রাপ্তির পূর্বে খাদ্য মান যাচাইয়ের জন্য সরকারের নির্ধারিত বেশ কয়েকটি ল্যাবরেটরিতে পরীার নিয়ম থাকলেও মুলাডুলি এগ্রোর েেত্র তা করা হয়নি। এরকম অনেক বিষয় এড়িয়ে গিয়ে মোটা অংকের টাকা উৎকোচের মাধ্যমে মুলাডুলি এগ্রোকে খাদ্য উৎপাদনের জন্য “ক্যাটাগরি-১ লাইসেন্স” প্রদানের সমস্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে ঈশ্বরদী প্রাণী সম্পদ দপ্তর। সেই প্রতিবেদনে দেখা যায়, মুলাডুলি এগ্রোতে ডিভিএম ডিগ্রিধারী একজন কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছেন। অথচ বাস্তবে তার কোন অস্তিত্ব দেখা যায়নি। মেশিনারিজ হিসেবে যেসব বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তার বেশিরভাগই সেখানে নেই। খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রনের জন্য ল্যাবরেটরির যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তাও সঠিক নয়, কারণ সেখানে কয়েকটি টেষ্ট টিউব ও কিছু বিকার ছাড়া কিছুই দেখা যায়নি। এমনকি দেখা যায়নি দ করিগরি জনবল। আশে-পাশে বিভিন্ন বসত বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলেও ওই তদন্ত প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটিকে দেখানে হয়েছে জনবসতি পূর্ণ এলাকার বাহিরে।
অপর দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা মৎস্য অফিস সুত্র জানায়, “ক্যাটাগরি-১ লাইসেন্স” প্রাপ্তির জন্য মুলাডুলি এগ্রো থেকে পর পর তিন বার আবেদন করা হয়। প্রতিবারই মৎস্য খাদ্য উৎপাদনের নীতিমালার শর্ত পূরণ না থাকায় সেই আবেদনটি বাতিল করা হয়। সুত্রটি আরও জানায়, লাইসেন্স না নিয়েই মুলাডুলি এগ্রো গোপনে খাদ্য উৎপাদন করে বাজারজাত করে আসছে।
মুলাডুলি এগ্রোর অন্যতম কর্নধার মাহফুজুর রহমান শুভ জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে গরুর খাদ্য, লেয়ার, সোনালী ও বয়লার মুরগির খাদ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। আর মাছের খাবার উৎপাদনের প্রক্রিয়া চলছে। শুভ আরও জানান, প্রতি সপ্তাহে ১০/১২ টন গরুর খাদ্য, ১০ টন লেয়ার খাদ্য ও ৫টন সোনালী ও বয়লার মুরগির খাদ্য উৎপাদন করা হয়। যা স্থানয়ি চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করা হয়ে থাকে। লাইসেন্স প্রাপ্তির বিষয়ে তিনি বলেন, সব প্রতিবেদন চুড়ান্ত হয়ে গেছে তাই ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আমাদের মৌখিক ভাবে খাদ্য উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছেন।
এসব বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, লাইসেন্স দেওয়ার মালিক আমি না। আমি শুধুমাত্র সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি মাত্র। তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে বাস্তবতার মিল নেই এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এজন্যই কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে মুলাডুলি এগ্রোকে। আর উৎকোচের বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দেননি।
ঈশ্বরদী উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাকিলা জাহান বলেন, “ক্যাটাগরি-১ লাইসেন্স” একটি বড় লাইসেন্স। মুলাডুলি এগ্রোর আবেদনের প্রেেিত আমরা সরেজমিন পরিদর্শনে যায়। গিয়ে দেখি অনেক শর্তই সেখানে পূরণ হয়নি। প্রায় ৮০/৯০ ভাগ শর্তই সেখানে অনুপস্থিত। এজন্য পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে পুরো বিষয়টি অবহিত করে ‘নেগেটিভ রিপোর্ট’ দেওয়া হয়েছে। শর্ত পূরণ করলে লাইসেন্স দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আইনের বাইরে গিয়ে লাইসেন্স দেওয়ার সুযোগ নেই।
যোগাযোগ করা হলে পাবনা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আল মামুন হোসেন মন্ডল বলেন, আমি নিজেই মুলাডুলি এগ্রো পরিদর্শন করেছি। বেশির ভাগ শর্ত পূরণ করেছে। বাকিটা পরে করে নিবে মর্মে অঙ্গিকার করেছে।
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ উত্তম কুমার দাস বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের পাঠানো প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেই রিপোর্ট ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ত্র“টিপূর্ণ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যোগাযোগ করা হলে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, লাইসেন্স ছাড়া কেউ ব্যবসা করতে পারবে না। আর মুলাডুলি এগ্রোর বিষয়টি আমি জানি। নীতিমালা বর্হিভূত কোন প্রতিষ্ঠানকে যাতে লাইসেন্স প্রদান করা না হয় সে ব্যাপারে পদপ গ্রহণ করা হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..