পাবনার ঈশ্বরদীতে ঋণ নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় (ওয়ারেন্ট ভুক্ত) ১২ জন কৃষককে গ্রেফতার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী গ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
ঈশ্বরদী থানা সুত্র জানায়, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিঃ পাবনা শাখা থেকে ‘ভাড়ইমারী সবজি চাষী সমবায় সমিতি’র নামে ৩৬ জন কৃষক ৪০ থেকে ১০ হাজার টাকা করে ঋণ গ্রহণ করেন। বার বার তাগাদা দেওয়া সত্বেও তারা ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে পাবনার অর্থ ঋণ আদালতে ওই ৩৬ জন কৃষকের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়। যার নম্বর- সি আর ১৪৭/২১ (ঈঃ), ধারা ৪০৬, ৪২০। এতেও ওই কৃষকেরা ব্যাংকের টাকা পরিশোধ বা ব্যাংকের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ কিংবা আদালতেও হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়। সেই গ্রেফতারী পরোয়ানা তামিল করতে আদালত ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার গভীর রাতে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার ও ওসি তদন্ত হাদিউল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ভাড়ইমারী গ্রামে অভিযান চালিয়ে ১২ জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী (কৃষক) কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- (১) আলম প্রামানিক, পিতা-শুকুর প্রামাণিক (২) মাহাতাব মন্ডল, পিতা- গনি মন্ডল (৩) মোঃ আব্দুল গনি মন্ডল, পিতা- মৃত সোবহান মন্ডল (৪) শামীম হোসেন, পিতা- কামাল প্রামানিক (৫) সামাদ প্রামানিক, পিতা- মৃত আয়েজ উদ্দিন (৬) নূর বক্স. পিতা-মৃত সামির উদ্দিন (৭) মোহাম্মদ আকরাম, পিতা- রিয়াজ উদ্দিন প্রামানিক (৮) মোহাম্মদ রজব আলী খাঁ, পিতা- লালু খাঁ (৯) কিতাব আলী, পিতা- মৃত কোরবান আলী (১০) হান্নান মিয়া, পিতা- হারেজ মিয়া (১১) মোহাম্মদ মজনু, পিতা-মৃত আবুল হোসেন (১২) মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান, পিতা- মৃত আখের উদ্দিন।
বাংলাদেশ কৃষ উন্নয়ন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পদক প্রাপ্ত কৃষক সিদ্দিকুর রহমান ওরফে কুল ময়েজ বলেন, যারা দেশের জন্য দিন রাত পরিশ্রম করে কাজ করে যাচ্ছেন, মানুষের মুখে খাদ্য পৌছাতে যেই মানুষ গুলোর অবদান অস্বীকার্য, সামান্য কিছু টাকার জন্য সেই কৃষকদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা সত্যিই পুরো কৃষক জাতীর জন্য দুঃখ ও লজ্জ্বার। করোনাকালীন সময়ে সারা দেশের ন্যায় ঈশ্বরদীর হাজারো কৃষক সর্বশান্ত। ‘ভাড়ইমারী সবজি চাষী সমবায় সমিতি’র নামে যে ৩৬ জন কৃষক পাবনা সমবায় ব্যাংক থেকে কেই ৪০ হাজার, ৩০ হাজার, ২০ হাজার বা ১০ হাজার টাকা করে ঋণ গ্রহণ করেছিল তারা অনেকেই টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অনেকের নাম মামলায় থেকে গেছে। যা ব্যাংক কর্মকর্তাদের গালিলতি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এবিষয়ে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ কুমার সরকার বলেন, আমরা শুধু গ্রেফতারী পরোয়ানা তামিল করেছি মাত্র। তারা কৃষক কি না প্রথমে না জানলেও পরে জেনেছি। থানায় শুধু গ্রেফতারী পরোয়ানার কাগজ আসে। সেখানে বিস্তরিত কিছু থাকে না। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply