ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ৫ শতাধিক ফলন্ত কলার গাছ ও ১ বিঘা জমির ফলন্ত শিম গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মিজানুর রহমান মজনু (৫০), ফজলুর রহমান ফজলু (৪০) ও জাহাঙ্গীর সরদার (৫৫)। বুধবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের পাবনা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয় বলে জানান ওসি অরবিন্দ সরকার।
জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বুধবার দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ৫ শতাধিক ফলন্ত কলার গাছ ও ১ বিঘা জমির ফলন্ত শিম গাছ কেটে ফেলে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় রাতেই ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মোঃ ফারুক হোসেন বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামী করে ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ন্যাক্কারজনক এই সন্ত্রাসী হামলা ও কৃষকের এত বড় ক্ষতিসাধণ করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত চাষী সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ ওরফে কুল ময়েজ, সাধারণ সম্পাদক ঈশ্বরদী পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবু হাসেম ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল কিতাব মন্ডল ওরফে লিচু কিতাব এর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি কৃষক প্রতিনিধিদল ক্ষতিগ্রস্থ কলার বাগান পরিদর্শন করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
পরে কৃষক নেতৃবৃন্দ, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও গ্রামবাসীর অংশ গ্রহণে ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলা, ৫ শতাধিক ফলন্ত কলার গাছ ও ১ বিঘা জমির ফলন্ত শিম গাছ কেটে ফেলার প্রতিবাদে এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।
অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত চাষী সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ ওরফে কুল ময়েজ বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে বার বার বলছেন এক টুকরো জমিও ফেলে রাখা যাবে না। সেখানে শুধুমাত্র শত্র“তা করে ৫’শ ফলন্ত কলার গাছ ও শিম ক্ষেত কেটে ফেলা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কারজনক এবং ক্ষমার অযোগ্য। মামলা দায়েরের পর রাতেই অভিযান চালিয়ে তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ওসি।
Leave a Reply