ঈশ্বরদীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত রিকশা চালক মামুন হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে আসামী করে ঈশ্বরদী থানায় মামলা হয়েছে। ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নিহত মামুনের মা লিপি আক্তার বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন এবং তার ভাই আনোয়ার হোসেন সহ চারজনকে আসামী করা হয়েছে। এছাড়াও ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আসামী করা হয়েছে। ঘটনার পর এখন পর্যন্ত জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এ ঘটনার পর দ্বিতীয় দিনের মত গতকাল শুক্রবার বিকালেও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নিহতের স্বজনেরা। গ্রেফতারকৃত দুই আসামীকে থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে এমন সংবাদে বিােভ দানা বাঁধে। সে সময় বিােভকারীরা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড় কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন কামাল এবং ভাতিজা হৃদয় হোসেনকে গ্রেফতার দেখিয়ে পাবনা র্যাব-১২ এর সদস্যরা গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরদী থানায় সৌপর্দ করতে এলেও থানার সামনে নিহতের স্বজনদের বিােভ মিছিল দেখে আসামী বহনকারী র্যাবের গাড়ী ফেরত চলে যায়।
এর আগে রিকশা চালককে গুলিতে হত্যার ঘটনায় বুধবার গভীর রাতে অভিযুক্ত যুবলীগ কর্মী আনোয়ার উদ্দিনের বড় ভাই ও তার ছেলেকে ‘আইনশৃঙ্খলা রাবাহিনীর সদস্য’ পরিচয়ে আটক করা হয়। বুধবার গভীর রাতে আনোয়ারের বড় ভাই যুবলীগ নেতা ও ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড় কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন কামাল এবং আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেনকে তাদের শৈলপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক’ আটক করে নিয়ে গেছে বলে পরিবারের প থেকে দাবি করা হয়।
উল্লেখ্য. বেপরোয়া গতিতে ভুটভুটি ও লেগুনা চালানো নিয়ে বাকবিতন্ডার জেরে গত বুধবার রাতে শহরের বিমানবন্দর সড়কের পশ্চিম টেংরি কড়ইতলা এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মামুন হোসেন নামের এক রিকশা চালক নিহত হয়। সে শহরের পিয়ারাখানী জামতলা এলাকার মানিক হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় গুলিতে আহত হয়েছেন একই এলাকার শরিফ হোসেনের ছেলে রিকশাচালক রকি (২৬) ও ছুরিকাঘাতে আহত ওই এলাকার বাবু হোসেন ওরফে বরকি বাবুর ছেলে সুমন (২৮)। গুলিবিদ্ধ ও আহত দুইজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ওইদিন রাতেই রিকশা চালককে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ কর্মী আনোয়ার উদ্দিনের বড় ভাই যুবলীগ নেতা ও ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড় কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন কামাল এবং আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেনকে তাদের শৈলপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক’ আটক করে নিয়ে যায় বলে পরিবারের প থেকে দাবি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে লাশের ময়না তদন্ত করা হলেও থানা চত্বরে লাশ রেখে বিােভ করে নিহত মামুনের স্বজনেরা। তারা থানার ভেতর ও থানার প্রধান ফটকের সামনে কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন ও তার ভাই আনোয়ার এর ফাঁসির দাবী করে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত মামুনের মা লিপি বেগম বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় পাবনা র্যাবের সদস্যরা ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড় কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন কামাল এবং আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply