ঈশ্বরদীতে রেলওয়ের আবাসিক কোয়ার্টারের প্রায় ৯০ ভাগ এবং ফাঁকা জমি অবৈধ দখলে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে পরিত্যক্ত ঘোষিত প্রায় ৪০০টি ইউনিটও এরমধ্যে রয়েছে। ফলে রেলওয়েতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাধ্য হয়ে অন্যত্র ভাড়া বাসায় থাকছেন। এতে বাড়ি ভাড়ার হিসেবে কাটা অর্থ প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। যে কারণে রাজস্ব আয় অর্জনে ল্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে অফিস সুত্রে জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ রেল শহর ঈশ্বরদীতে রেলওয়ের ৩৪২টি আবাসিক ভবন রয়েছে। এ ভবনগুলোতে মোট ইউনিটের সংখ্যা রয়েছে ১ হাজার ২১২টি। ইউনিটগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি অবৈধ দখলে রয়েছে। পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও ৩৯৬টি ইউনিটে অবৈধভাবে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। তবে রেল কর্তৃপ বলছে- বৈধ কোনো বসবাসকারী এসব ভবনে বসবাস না করায় তারা ভাড়া খাতে কোনো অর্থ আয় করছেন না।
এদিকে অবৈধ বাসিন্দাদের অনেকে বলেন, আগে তাদের বাবা রেলওয়েতে চাকরি করতেন। জন্মের পর থেকে এখানে আছেন। তাই এখনও বাস করছেন। এসব বাসায় এমন অনেকেই রয়েছেন যাদের বাপ-দাদা আগে রেলে চাকরি করতেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত উত্তরাধিকারের মতোই বসবাস করলেও তা এখন অবৈধ। পরিবারগুলো পরে বড় হয়ে যাওয়ায় কোয়ার্টারের সামনে ও পিছনের ফাঁকা জায়গা রেল কর্তৃপরে অনুমতি ছাড়াই দখলে নিয়ে সেমিপাকা ঘর তুলে বসবাস করে চলেছেন। এসব কোয়ার্টার মাঝে মধ্যেই হাত বদল হচ্ছে। এই হাত বদলের সময় ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয় বলে জানা গেছে। অনেকেই এই কোয়ার্টারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হতে বিদ্যুৎ সংযোগও নিয়েছেন। অবৈধ বসবাসকারীরা পৌর এলাকার সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও এদের হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হয় না।
রেলের শ্রমিক-কর্মচারীরা জানান, রেলের নিজস্ব কোয়ার্টার থাকা সত্ত্বেও বাড়তি টাকা দিয়ে তাদের অন্যত্র বাড়ি ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে। এতে রেল কর্মীদের টাকা যেমন বেশি খরচ হচ্ছে, তেমনি রেল বাড়ি ভাড়া খাতে রাজস্ব প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হচ্ছে। কোয়ার্টার দেখা শোনার কাজে নিয়োজিত কর্তৃপরে উদাসীনতার কারণেই দখলমুক্ত হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে কোয়ার্টার দখল বা হাত বদলের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন। তারা আরও জানান, দখলদারের সংখ্যা এখন অনেক বেশি। সীমিত লোকবল নিয়ে দখল উচ্ছেদ করতে গেলে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে।
Leave a Reply