ঈশ্বরদীতে রাবেয়া খাতুন (৩০) নামের এক সন্তানের জননী ও এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এক সন্তানের জননীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত লম্পট ধর্ষক সোহেল রানা (শলিস) (৪২) নামের এক লম্পটকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নে এই দু’টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নে অবস্থিত বিডি ক্রিয়েশন নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার বামনগ্রাম নড়াইখালি গ্রামের মৃত নওশাদ আলীর স্বামী পরিত্যক্ত মেয়ে এক সন্তানের জননী মোছাঃ রাবেয়া খাতুন (৩০) এর পরিচয় হয় দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মুনশিদপুর গ্রামের শহীদ প্রামানিকের ছেলে সোহেল রানা (শলিস) এর। সেই পরিচয়ের সুত্র ধরেই সোহেল রানা তাকে প্রায় প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেয়। ঘটনার দিন গত ৬ ফেব্রুয়ারী রাত ৮৭টায় চাকুারি ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার জন্য অপেক্ষায় থাকা রাবেয়া খাতুনকে তাঁর বাড়িতে পৌছে দেওয়ার কথা বলে অভিযুক্ত লম্পট সোহেল রানা তার মটর সাইকেলে নিয়ে দাশুড়িয়া ইউনিয়নের ‘ভবানীপুর রিসোর্ট’ এ নিয়ে একটি রুমে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ৭ ফেব্রুয়ারী রাতে রাবেয়া খাতুন বাদী হয়ে লম্পট সোহেল রানা (সলিশ) কে আসামী করে ঈশ্বরদী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক লম্পট সোহেল রানা কে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। গতকাল বুধবার পাবনা আদালতের মাধ্যমে আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার।
অপর দিয়ে দাশুড়িয়া ইউনিয়নের কারিগর পাড়া গ্রামে এক শিশু (৭) শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় তুলকালাম কান্ডও ঘটেছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ওই শিশু শিক্ষার্থীর বাবা। গতকাল বুধবার বিকালে ইশ্বরদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
জানা গেছে, দাশুড়িয়া ইউনিয়নের কারিগর পাড়া গ্রামের পান্না আলীর শিশু কন্যা ও একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থী (৭) কে গত ৭ ফেব্রুয়ারী বিকালে তারই আপন চাচাতো ভাই ও প্রবাসী পাঞ্জাব আলীর ছেলে দাশুড়িয়া এম এম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নয়ন ইসলাম (১৪) তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনাটি উভয়ের চাচী সোনিয়া খাতুন দেখে ফেলায় তিনিই নয়নকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে শাসন করে ওই মেয়ের পরিবারকে ঘটনাটি জানায়। এরপর মেয়েটির বাবা ছেলে নয়নের মা কুলছুম বেগমকে মারধর করে। সে সময় তার শ্বাশুড়ি বাতসা বেগম (৯৫) বাঁধা দিলে তাকেও মারধর করে মেয়ের বাবা পান্না। এক পর্যায়ে ঘটে নানা তুলকালাম ঘটনা। গতকাল বুধবার সকালে ওই মেয়েটিকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্ষক্সে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনার বিবরণ দিয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এসব বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, এক সন্তানের জননীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আর শিশু শিক্ষার্থীর ঘটনায় লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করা হচ্ছে।
Leave a Reply