নৌকা বিরোধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুসিয়ারী উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যারা অতীতে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে দলের প্রার্থীর বিপে কাজ করেছেন তাদের আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না। ভবিষ্যতে যাতে কেউ দলের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিতে না পারে সেজন্য শাস্তি স্বরুপ এই নিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু দলীয় মনোনয়নই নয়, দলের গুরুত্বপূর্ণ পদেও তাদের রাখা হবে না বলে ‘সাফ’ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার গণভবনে অনুষ্ঠিত মতাসীন আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এমন ‘কড়া’ সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদটি দেশের সব গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় চরম হতাশায় পড়েছেন সারা দেশের ন্যায় ঈশ্বরদীর বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বনকারী নেতা। যারা আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী। ঈশ্বরদীতে বিগত সময়ে কারা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছেন তাদের একটি তালিকা ইতি মধ্যেই তৈরি করা হয়েছে। যা আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগেই দলীয় হাই কমান্ডের কাছে তুলে ধরা হবে। ঈশ্বরদীর ৭ ইউনিয়নে প্রায় এক ডজন নেতা রয়েছেন এই তালিকায় এমন তথ্য জানিয়েছে বিশ্বাস্ত ওই সুত্রটি।
সুত্র জানায়, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও একাধিক বে-সরকারী জরিপ সংস্থার পক্ষ থেকে আওয়ামীলীগের দলীয় হাইকমান্ড বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। যার প্রভাব আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর উপর পড়বে বলে সুত্রে জানা গেছে।
আওয়ামীলীগের একাধিক সুত্র জানায়, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ও নির্বাচন পরিচালনাসহ প্রচারণা করতে বাধা দেওয়া এবং ইউনিয়নে প্রবেশ করতে না দেওয়া ইউপি চেয়ারম্যানসহ দলীয় একাধিক নেতারা এবার আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় নৌকা প্রতিক পাচ্ছেন না। যা আওয়ামীলীগের দলীয় হাইকমান্ড ও দলের সাধারণ সম্পাদকসহ দলের একাধিক মুখপত্র অনেকবার মিডিয়ার সামনে এমন কথা বলেছেন। সর্বশেষ গত শুক্রবার আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা স্পষ্ট করেই সে কথা বলেছেন। আর তাই এবার অধিকাংশ ইউনিয়নেই চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ থেকে নতুন মুখ দলীয় প্রার্থী হতে পারেন। তবে দলীয় নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ‘কোন কোন চেয়ারম্যান’ আওয়ামীলীগের দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না তা সুত্রগুলো নিশ্চিত করেননি। তবে নাম প্রকাশ করা হবে শর্তে সুত্রগুলো আকার ইঙ্গিতে শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী চেয়ারম্যানের নাম প্রকাশ করেছেন। এই তথ্য নিশ্চিত হতে অবশ্যয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রদান পর্যন্ত অপো করতে হবে বলেও সুত্রগুলো অভিমত ব্যক্ত করেছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নায়েব আলী বিশ্বাস বলেন, বিগত ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যারা নৌকার বিরোধীতা করেছে আগামী নির্বাচন এবং দলীয় কাউন্সিলে তাদের জায়গা হবে না।
এসব বিষয়ে পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম সহ-সভাপতি ও পাবনা-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গ করে দলের প্রার্থীর বিপে যারা নির্বাচন করেছেন বা যারা ওই নির্বাচনে সহযোগীতা করেছেন তাদের বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেটিই চুড়ান্ত। নৌকা বিরোধীরা শুধু দলীয় মনোনয়নই নয়, দলেও কোন গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন না। এবিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
Leave a Reply